বাংলাদেশে ঐতিহ্যবাহী পোশাক সংস্কৃতি আজকাল আবার ফিরে এসেছে। কখনোই পুরনো হয়ে না ওঠা শাড়ি, জামদানি, পাঞ্জাবি, সেলওয়ার-কামিজ—এগুলো এখন আবার মানুষের দৈনন্দিন পোশাকের অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু কেন এই ট্রেন্ড আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে?
শুরুর দিকেই বলতে হয়, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি যে আগ্রহ দেখাচ্ছে, তা কোনো নতুন বিষয় নয়। বিশেষ করে, সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী পোশাকের প্রতি আকর্ষণ বেড়েছে। পোশাকের এই বৈচিত্র্য এখন কেবল উৎসব বা বিবাহ-শাদি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নেই, বরং দৈনন্দিন জীবনেও মানুষের পোশাকের মধ্যে এই ঐতিহ্য প্রবাহিত হতে শুরু করেছে।
একই সঙ্গে, ডিজাইনারদের ক্রিয়েটিভিটির প্রসার এবং দেশীয় শিল্পের প্রতি সমর্থনও এই ট্রেন্ডকে আরো শক্তিশালী করেছে। জামদানি, কাতান, বেনারসি শাড়ি—এগুলো আজকাল শুধু বিয়ে বা বিশেষ উপলক্ষে নয়, প্রতিদিনকার জীবনেও নানা অনুষ্ঠানে পরা হচ্ছে। এসব পোশাক ফ্যাশনের অংশ হয়ে উঠেছে এবং মানুষ তাতে নিজেদের স্টাইল বা পরিচয় প্রকাশ করতে পছন্দ করছে।
এছাড়া, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের নিত্যনতুন উদ্ভাবনও এই প্রবণতাকে বাড়িয়েছে। তরুণ ডিজাইনাররা ঐতিহ্যবাহী উপাদানগুলো আধুনিক ডিজাইনের সাথে মিশিয়ে এক নতুন ফিউশন তৈরি করছেন। এই আধুনিক প্রভাবও পোশাকের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করছে। যেমন, শাড়ির সাথে ক্যাজুয়াল টপ, বা পাঞ্জাবির সাথে বিভিন্ন নকশা যোগ করা, যা রুচিশীলতার পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে।
অতএব, বাংলাদেশে ঐতিহ্যবাহী পোশাকের প্রতি আগ্রহের এই জাগরণ শুধু ফ্যাশন নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির প্রতি নতুন করে শ্রদ্ধা জানানো এবং ঐতিহ্যকে আধুনিক যুগের সাথে সংযুক্ত করার এক প্রচেষ্টা। এই ধারাটি ভবিষ্যতেও প্রবল হতে পারে, যেখানে দেশীয় পোশাক কেবল ঐতিহ্য নয়, বরং একটি স্টাইল স্টেটমেন্ট হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত হবে।